বড়লেখায় ট্রাকের চাপায় প্রাণ হারানো নারীর জীবনের দাম লাখ টাকা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:৩২:৩৬
বড়লেখা ইনসাইডার প্রতিবেদন::মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইয়ের বেপরোয়া গতির ট্রাকের চাপায় প্রাণ হারালেন অটোরিকশা যাত্রী রায়না বেগম (৪৮)। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের সুরমা কমিউনিটি সেন্টারের পাশে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত রায়না বেগম উপজেলার কবিরা গ্রামের মৃত হুরুধন মিয়ার স্ত্রী।
এই ঘটনার পর হতদরিদ্র ওই নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা হয়নি। এজন্য পুলিশ কোনো আইনী পদক্ষেপও নেয়নি অভিযুক্ত ট্রাক চালকের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাটি মীমাংসার নামে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাত্র ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়ভাবে ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
পরিবার জানায়, চিকিৎসার জন্য সিএনজি অটোরিকশাযোগে শাহবাজপুর বাজারে যাচ্ছিলেন রায়না বেগম। পথিমধ্যে একটি ট্রাক সিএনজিটিকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, রায়না বেগমের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ট্রাকটির মালিক উত্তর শাহবাজপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী আ.লীগ নেতা আহমদ জুবায়ের লিটনের ভাই প্রভাবশালী ঠিকাদার দেলোয়ার হোসাইন। এলাকাবাসীর দাবি, ট্রাকটি তাদের অবৈধ ইটভাটার বিভিন্ন মালামাল পরিবহন কাজে ব্যবহৃত হত এবং এটির কোনো লাইসেন্স নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, সাবেক চেয়ারম্যান লিটন মাস্টারের ভাই দেলোয়ার হোসাইনের ট্রাকের চাপায় নারীর মৃত্যুর পর আইনী ঝামেলা এড়াতে দেলোয়ার পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেন। পরে নিহত ওই নারীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, চেয়ারম্যানের ভাই দেলোয়ার প্রভাবশালি। তাদের অর্থবিত্ত আছে। অতীতেও তাদের ট্রাক চাপায় অনেকে হতাহত হয়েছেন। কিন্তু তাদের বিচার হয়নি। তারা পুলিশকে ম্যানেজ করে ঘটনাগুলো চাপা দিয়েছেন। যার কারণে এবারও এক নারীকে প্রাণ দিতে হলো। সামান্য টাকায় বিষয়টা সমাধান হলো। যা খুবই দুঃখজনক।
বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ জানায়, নিহত নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।